যারা মহা নবী সা: কে কাছ থেকে চিনেছে আর জানছে, তাদের মধ্যে হযরত বেলাল রা: অন্যতম।হযরত বেলাল রা: বিশ্ব নবীকে কিভাবে ভালবেসেছেন তার একটি নমুনা :
হযরত বেলাল (রাঃ) প্রায় পাগলের মতো হয়ে গেলেন।
তিনি ব্যাগ গুছিয়ে চলে যাচ্ছেন।
সাহাবীরা তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “যে দেশে মহানবী (সাঃ) নেই, আমি সেখানে থাকবো না।”
এরপর তিনি মদীনা ছেড়ে দামস্কে চলে যান।
কিছুদিন পরে হযরত বেলাল(রাঃ) স্বপ্নে দেখেন যে মহানবী (সাঃ) তাকে বলছেন,
“হে বেলাল (রাঃ) তুমি আমাকে দেখতে আসো না কেন?”
এ স্বপ্ন দেখে তিনি মহানবী (সাঃ) এর রওজা মুবারক দেখতে মদীনার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
বেলাল (রাঃ) এর আগমনের খবরে মদীনাবাসী আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায়।
বেলাল (রাঃ) হলেন মহানবী (সাঃ) এর নিযুক্ত মুয়াজ্জিন।
মহানবী (সাঃ) এর ইন্তেকালের পর বেলাল (রাঃ) আর আযান দেননি।
তার কন্ঠে আযান শুনতে সাহাবীরা ব্যাকুল হয়ে আছেন।
তারা তাকে আযান দিতে বললে তিনি বলেন যে, তিনি পারবেন না।
অনেক জোর করে তাকে বললে তিনি উত্তরে বলেন, “আমাকে অযান দিতে বলো না।
কারণ এটা আমি পারবো না।আপনারা আমাকে বিরক্ত করো না।
আমি যখন আযান দিই তখন ‘আল্লাহু আকবর’ বলার সময় আমি ঠিক থাকি।
‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার সময়ও ঠিক থাকি।
‘আশহাদু অন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ বলার সময় মসজিদের মিম্বারের দিকে তাকিয়ে দেখি যে মহানবী (সাঃ) বসে আছেন।
কিন্তু যখন মিম্বারে তাকিয়ে তাকে দেখবো না, তখন সহ্য করতে পারবো না।”
কিন্তু তবুও সাহাবীরা জোর করলো।
অবশেষে হাসান ও হোসাইন (রাঃ) এসে তাকে জোর করলে তিনি রাজী হন।
তার আযান শুনে সকল সাহাবীর চোখে পানি এসে যায়।
কিন্তু আযানের মাঝেই বেলাল (রাঃ) বেহুশ হয়ে পরে যান।
তাকে সকলেই ধরে নিয়ে যান।শান্ত করার চেষ্টা করেন।
পরে জ্ঞান ফিরার পর তিনি সকলকে বলেন,
“আমি যখন আযান দিচ্ছিলাম তখন ‘আল্লাহু আকবর’ বলার সময় আমি ঠিক ছিলাম ।
‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার সময়ও ঠিক ছিলাম।
কিন্তু ‘আশহাদুঅন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ বলার সময় মসজিদের মিম্বারের দিকে তাকিয়ে দেখি যে মহানবী (সাঃ) আজ সেখান বসে নেই।
এ দৃশ্য আমি সহ্য করতে পারলাম না।
তাই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলাম।”
রাসূলের প্রতি সাহাবীদের ভালোবাসার তুলনা হয়না!
সুবহানআল্লাহ! আল্লাহ আমাদেরকে নবীর ভালবাসা বুঝার তাওফিক দান করুন। আর নবীকে বেশী বেশী ভালবাসার সুযোগ দান করুন। আমিন।